,

বানিয়াচংয়ে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত ॥৪৯ রাউন্ড গ্যাস সেল ॥ ৩৮ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ

বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥ বানিয়াচংয়ের যাত্রাপাশা দক্ষিণ বনমথুরা গ্রামে দুই পক্ষের তিন ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত শতাধিক লোক আহত হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৪৯ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস সেল ও ৩৮ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। আহতদের অনেকেই টেটাবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিট হতে রাত ৯টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত মোকাম হাটি ও গড়পাড় হাটির মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গভীর রাতে এ রিপোর্ট লেখাকালীন আশংকাজনক অবস্থায় অনু মিয়া (৫৫)সহ তিনজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ও নজরুল (২০), আশরাফ (২৮), লিটন (২৭)সহ অন্তত ২৫ জনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করার খবর পাওয়া যায়। এছাড়া অসংখ্য আহতদের বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা চলছিল। তাদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া যায় তারা হলেন হোসেনা বেগম (৬০), মনির মিয়া (২৫), রাশিদ (২০), ওয়াসিদ (২১), হাসিদ (৪৪), আল-আমিন (২৫), মুর্শেদ (২০), এমদাদুল (৩০), সফিকুল (৪০), নুরুল আমীন (২৫), মোস্তাকিম (২২), শিহাব (৩০), ছাবির মিয়া (৩০), জুমন মিয়া (২২), মঞ্জুর আলী (৫০), রামীম (২০), রুফু (২০), জানু (২১), দুলাল মিয়া (১৯), জামান (৩য় পৃষ্টায় দেখুন) (২৩), তৌহিদ (২১), সজলু মিয়া (৪০), নজরুল (২০), শোয়েব (১৮), অলিউর (২২), ডালিম (২০), সুমন (২৫), আখলাক (২৫), সাকিব (২৪), জালাল (২০), শিবলু (২০), স্বপন (২০), হুমায়ুন (৩৮), আব্দুল হান্নান (৩০), আলমগীর (২০), লুৎফুর (২০), দুলাল আহমেদ (২১), সাহিদ মিয়া (৪৫), আজমল (২৭) ও বিল্লাল (৬০)। সংঘর্ষ চলাকালে ইউএনও মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম, এসিল্যান্ড রায়হানুল হারুন, ওসি নির্মলেন্দু চক্রবর্তী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন খানসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পুলিশ নিয়ে মারমুখি দুই পক্ষের মধ্যস্থলে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের প্রাণপণ চেষ্টা চালান। কিন্তু মারমুখি দুই পক্ষ সংঘর্ষ অব্যাহত রাখলে হবিগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ ও আজমিরীগঞ্জের শিবপাশা ফাঁড়ি থেকে আরেকদল পুলিশ এনে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানো হয়। পুলিশ কয়েক দফায় ৪৯ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস সেল ও ৩৮ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সংঘর্ষ চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ওসি নির্মলেন্দু চক্রবর্তীসহ ৪/৫জন পুলিশ ও দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার পত্রিকার বানিয়াচং প্রতিনিধি তৌহিদুর রহমান পলাশ আহত হন। সংঘর্ষের কারণ সম্পর্কে এলাকাবাসীর কাছ থেকে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। কেউ কেউ জানান, মোকাম হাটির আনছার আলীর শিশুপুত্র ও গড়পাড় হাটির হারুন মিয়ার ভাতিজার মধ্যে ঝগড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে এ ভয়াবহ সংঘর্ষ বাঁধে। আবার কেউ কেউ জানান, গড়পাড় হাটির টেনু ও মোকাম হাটির পলাশ এর মধ্যে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আবার মোকাম হাটির তৈয়ব আলী জানান, পাওনা টাকা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে কাদের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।


     এই বিভাগের আরো খবর